জয়রাশি কর্তৃক ন্যায়সুত্র-এ প্রদত্ত প্রত্যক্ষের লক্ষণধর্ম বিচার

Abstract

সূত্রসাহিত্য, বিশেষত ন্যায়সূত্র থেকেই লক্ষণ ও প্রমাণ ভিত্তিক দর্শনের সূচনা হয়। পরবর্তীকালে দিনাগ এর সুদৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেন। এইসকল সকল দার্শনিকগণ মনে করতেন যে লক্ষণ ও প্রমাণের দ্বারা বস্তুর সিদ্ধি হয়। কিন্তু জয়রাশি এই লক্ষণ প্রমাণ ভিত্তিক দর্শনের তীব্র বিরোধী ছিলেন। তাঁর রচিত তত্ত্বোপপ্লবসিংহ গ্রন্থে তিনি বিভিন্ন সম্প্রদায় কর্তৃক প্রদত্ত প্রমাণের লক্ষণ বিচার পূর্বক খণ্ডন করেছেন। এই নিবন্ধটিতে মূলত ন্যায়সূত্রোক্ত প্রত্যক্ষের লক্ষণটির আলোচনা করা হয়েছে। ন্যায়শাস্ত্র সকল শাস্ত্রের প্রবেশিকা স্বরূপ। প্রবেশিকা স্বরূপ শাস্ত্রের সর্বাপেক্ষা সবল ও বহুল আলোচিত লক্ষণ হলো প্রত্যক্ষের লক্ষণ। মহর্ষি গৌতম এই প্রত্যক্ষের লক্ষণ প্রসঙ্গে বলেছেন, "ইন্দ্রিয়ার্থসন্নিকর্ষোৎপন্নং জ্ঞানমব্যপদেশ্যমব্যভিচারী ব্যবসায়াত্মকং প্রত্যক্ষম্।"' জয়রাশিভট্ট তত্ত্বোপপ্লসিংহ গ্রন্থেও এই সূত্রটির উল্লেখ্য করেছেন। সূত্রে 'প্রত্যক্ষম্' পদটি লক্ষ্যপদ ও লক্ষণধর্ম হল ১) ইন্দ্রিয়ার্থসন্নিকর্ষোৎপন্নত্ব ২) জ্ঞানত্ব ৩) অব্যপদেশ্যত্ব ৪) অব্যভিচারিত্ব ও ৫) ব্যবসায়াত্মকত্ব। এই পাঁচটি লক্ষণধর্মের মধ্যে জয়রাশি তত্ত্বোপপ্লবসিংহ গ্রন্থে 'অব্যপদেশ্য' পদের অযৌক্তিকতা বিচার করেননি। তিনি বলেছেন 'অব্যপদেশ্য' পদের অযৌক্তিকতার বিচার লক্ষণসার গ্রন্থে আলোচনা করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষণসার গ্রন্থটি পাওয়া যায় না। তত্ত্বোপপ্লবসিংহ গ্রন্থ অনুসারে 'ইন্দ্রিয়ার্থসন্নিকর্ষোৎপন্ন', 'অব্যভিচারী' ও 'ব্যবসায়াত্মক' এই তিনটি লক্ষণধর্মের অযৌক্তিকতার বিচার এই নিবন্ধটিতে আলোচনা করা হয়েছে এবং এই বিচারে প্রতিপাদন করা হয়েছে যে, প্রত্যক্ষের লক্ষণধর্ম সমূহ যথার্থ নয়।